
রফিকুল ইসলাম ফুলাল, দিনাজপুর প্রতিনিধি: দেশে চলমান অস্থিরতার সুযোগে তৎপর হয়ে উঠেছে দাদন ব্যবসায়ীরা। অসহায় পরিবারগুলোর বিরুদ্ধে করা হচ্ছে মিথ্যা মামলা। ঘুমকি ধামকি সহ ভয়ে ভীতি প্রদর্শন করছে দাদন ব্যবসায়ীরা।
এমন বাস্তবতায় আজ ৭ সেপ্টেম্বর সকালে দিনাজপুর প্রেসক্লাবের সম্মেলন কক্ষে সংবাদ সম্মেলন করেছে ভুক্তভোগীরা।
সংবাদ সম্মেলনে উল্লেখ করা হয়, দিনাজপুর জেলার পার্বতীপুর উপজেলার হুগলি পাড়া গ্রামের সুদখোর ও দাদন ব্যবসায়ী নাজমা সাজু গং চক্রের নির্যাতনের শিকার বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ। আমাদের পারিবারিক অভাব অনটনের কারণে কিছু টাকার প্রয়োজন হলে নাজমা ও সাজু চক্রের কাছে কিছু টাকা ঋণ নেন। কিন্তু তারা আমাদেরকে ফাঁদে ফেলে কৌশলে চেকের পাতা ও ফাকা স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর করে নেয়। উক্ত চক্র ব্যাংক কর্মকর্তা-কর্মচারীদের যোগ সাজসে চক্রবৃদ্ধি ঋণের ফাঁদে ফেলে বহু অসংখ্য মানুষকে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করেছে।
এই চক্রের মধ্যে রয়েছে নাজমা, সাজু, মুক্তা শাহাজাদাসহ ২১ জন। তারা দিনাজপুর, রংপুর, নীলফামারী, রাজশাহী ঢাকা সহ দেশের বিভিন্ন জেলায় ৭০০ এর বেশি মিথ্যা মামলা দায়ের করেছে যার মোট টাকার পরিমান কয়েক কোটি।
সংবাদ সম্মেলনে আরো উল্লেখ করা হয়, এই চক্রের ফাঁদে পড়ে এরই মধ্যে আত্মহত্যা করেছে দুইজন, ৬০ জনের বেশি মানুষ মিথ্যা মামলায় জেল হাজত খেটেছেন। প্রায় ১০০ জন মানুষ ঘরবাড়ি ও ভিটেমাটি ছাড়া হয়েছে। এছাড়া এই গং এর দ্বারা জোরজবস্তি মূলক ১৯ জনের বাড়ি ঘর ও জায়গা দখলসহ নানা অপকর্ম করেছে তারা।
এরই প্রতিবাদে এবং প্রতিকার চেয়ে ইতিমধ্যে রংপুর বিভাগীয় কমিশনার, দিনাজপুরের জেলা প্রশাসক, দিনাজপুরের পুলিশ সুপার, উপজেলা নির্বাহী অফিসার সহ সংশ্লিষ্ট সকল দপ্তরে বিভিন্ন অভিযোগ করার পরও কার্যত কোন প্রতিকার পায়নি ভুক্তভোগীরা।
এসব হয়রানি ও মিথ্যা মামলা থেকে অব্যাহতি পেতে সংশ্লিষ্ট সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন ভুক্তভোগীরা।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ভুক্তভোগী পার্বতীপুর উপজেলার হুগলি পাড়া গ্রামের মোঃ গিয়াস উদ্দিন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে পার্বতীপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার শাহনাজ মিথুন মুন্নি বলেন, বিভিন্ন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান, সরকারি ব্যাংকের ম্যানেজারের সিল ও বিভিন্ন ব্যক্তির স্বাক্ষরযুক্ত ফাঁকা চেক বই ও দলিলপত্র সহ নথিপত্র নাজমা বেগমের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। ভুক্তভোগী শিক্ষক কর্মচারী ও নাজমা বেগমকে ডেকে বিষয়টি নিষ্পত্তি করার উদ্যোগ নেওয়া হবে।